পয়ন্তপ Bd fruit’s feature and nutrition quality: কাঁঠালের সবচেয়ে বড় গুণ কোলেস্টেরল পয়ন্তপ bd fruit’s feature and nutrition quality

July 18, 2019

কাঁঠালের সবচেয়ে বড় গুণ কোলেস্টেরল

কাঁঠালের সবচেয়ে বড় গুণ কোলেস্টেরল





কাঁঠালের সবচেয়ে বড় গুণ কোলেস্টেরল


বাংলাদেশের পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ উপকারী ফলে তালিকায় কাঁঠাল অবস্থান সবার উপরে। মানব দেহের জন্য প্রয়োজনীয় সব উপাদানই রয়েছে কাঁঠালে। কাঁঠালের সবচেয়ে বড় গুণ হল কাঁঠালে কোনপ্রকার কোলেস্টেরল নেই।
কাঁঠালের ফ্রুকটোজ, সুক্রোজ, ক্যালোরি ও শর্করা মানব দেহে দ্রুত শক্তি যোগায়, চর্বির পরিমাণ খুব কম থাকে বলে ওজন বৃদ্ধির ভয় থাকে না।

প্রতি ১০০ গ্রাম (৩.৫ আউন্স) কাঁঠালের(Jackfruit) পুষ্টিগত মান
শক্তি
৩৯৭ কিজু (95-98 kcal)
1.5 g
(6%) 0.92 mg
(9%) 0.105 mg
0.64 g
প্রোটিন (কাঁচা কাঁঠালে)
2.06 g
প্রোটিন (পাকা কাঁঠালে)
1.72 g
19.08 g
(1%) 61 μg
(1% )5 μg
157 μg
ভিটামিন-বি১(পাকা কাঁঠালে)
0.3 mg
ভিটামিন-বি১(পাকা কাঁঠালে)
0.11 mg
ভিটামিন বি-২ (কাঁচা কাঁঠালে)
0.9mg
ভিটামিন-বি২(পাকা কাঁঠালে)
0.15mg
(25%) 0.329 mg
ভিটামিন সি (কাঁচা কাঁঠালে)
(17%) 13.8 mg
ভিটামিন সি (পাকা কাঁঠালে)
21 mg
(2%) 0.34 mg
(5%) 0.235 mg
(5%) 0.055 mg
(2%) 24 mg
(6%) 24 μg
(1%)0.13 mg
শ্বেতসার (কাঁচা কাঁঠালে)
0.03 mg
শ্বেতসার (পাকা কাঁঠালে)
0.1 mg
কার্বোহাইড্রেট    
38.4. g
(8%)29 mg
(3%) 21 mg
(10%) 448 mg
(2%) 0.23 mg
(2%)0.043 mg
সোডিয়াম
(0%) 2 mg
আয়রন
1.2 mg
চর্বি
0.4 mg
একক
μg = মাইক্রোগ্রামসমূহ,
mg = মিলিগ্রামসমূহ
IU = আন্তর্জাতিক এককসমূহ
















































   পুষ্টিগত মানের তথ্য নেট থেকে সংগৃহীত

বৈজ্ঞানিক নাম Artocarpus heterophyllus, ইংরেজি নাম Jackfruit, আমাদের দেশের স্থানীয় নাম কাঁঠাল। Moraceae পরিবারের Artocarpus গোত্রের ফল। ভারত ও বাংলাদেশে চাষ-কৃত জাতকে খাজা ও গালা এই দুই ভাগে ভাগ করা হলেও কাঁঠালের আরও বেশ কিছু জাত রয়েছে। খাজা ও গালা দুই জাতের মাঝখানের বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হিসেবে রয়েছে রসখাজা। এছাড়াও হাজারী, গোলাপগন্ধা সিঙ্গাপুর, বারোমাসি, চম্পাগন্ধা, রুদ্রাক্ষি, সিলোন, পদ্মরাজ ইত্যাদি জাতের কাঁঠাল রয়েছে। বাংলাদেশে আছে শুধুমাত্র হাজারী কাঁঠাল বাকী সব ভারতে।

কাঁঠালের সবচেয়ে বড় গুণ কোলেস্টেরল


কাঁঠালের উৎপত্তি স্থান হিসেবে ভারতীয় উপমহাদেশকে বিবেচিত করা হয়; বিশেষ করে বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী এলাকাসমূহ। পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, আসাম, দক্ষিণ ভারত, মায়ানমার, মালয়, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ ইত্যাদি অঞ্চল ছাড়া বিশ্বের আর কোথাও এত ব্যাপকহারে কাঁঠালের চাষ করা হয় না। তবে সীমিত আকারে কাঁঠাল জন্মায় ব্রাজিল, ওয়েস্ট ইন্ডিজের, জামাইকা। বাংলাদেশের মধুপুর, গাজীপুর এবং পার্বত্য এলাকায় কাঁঠালের চাষ বেশি হয়।


কাঁঠালের বহির্ভাগ বেশ পুরু ও কাঁটাযুক্ত কিন্তু ভিতরে ঠিক উল্টো নরম তুলতুলে। মাঝখানটায় একটি কাণ্ড থাকে ঐ কাণ্ড ঘিরে থাকে কোয়া বা কোষ; কোয়ার মাঝখানে বীজ বা বীচি থাকে। কাঁঠাল হলুদ, সবুজ, কালচে খয়েরি ইত্যাদি রং-এর হয়ে থাকে। উপরের রং যা-ই হোক না কেন সব পাকা কাঁঠালের ভিতরের রং হলুদ তবে হাল্কা কিংবা গাড় রং-এর কিছুটা পার্থক্য হয়ে থাকে। পাকা কাঁঠালের ভিতরের কোষ কোমল, মিষ্টি ও রসালো। কোন কোন কাঁঠালের কোষ অপেক্ষাকৃত কচকচে কিংবা শক্ত হয়ে থাকে; স্বাদেও থাকে ভিন্নতা। কাঁঠাল বিভিন্ন আকারের হয়ে থাকে, ছোট-বড়-মাঝারি, কখনো কখনো কাঁঠাল অনেক বড় আকারের হয়। কাঁঠাল গ্রীষ্মকালীন ফল। কাঁঠালের ফুলকে বলা হয় মুচি আর কাঁচা কাঁঠালকে বলা হয় এঁচোড়।


কাঁঠালের সবচেয়ে বড় গুণ কোলেস্টেরল


কাঁঠাল বাংলাদেশের জাতীয় ফল। বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্র কাঁঠাল গাছ জন্মে। বসন্ত কালের শেষের দিকে গ্রীষ্মের কালের প্রথমে দিকে কাঁঠালের মুচি বা ফুল হয় এবং গ্রীষ্মের মাঝামাঝি সময় থেকেই কাঁঠাল পাকা শুরু হয় আর বর্ষায় পাকা কাঁঠালের ভরা মৌসুম; প্রায় দুই থেকে তিন মাস কাঁঠাল পাওয়া যায়। কাঁঠাল দিয়ে বিভিন্ন রকমের মজাদার পিঠা ও জেলি আর বীচি দিয়ে হালুয়া তৈরি করা হয়। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ কাঁঠাল দিয়ে মুড়ি খেতে খুব পছন্দ করে।


কাঁঠালে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, বি১, বি২, বি-৬, সি, ই, কে, নিয়াসিন, ফলেট, কপার, ম্যাংগানিজ, ম্যাগনেসিয়াম। এছাড়াও আছে ক্যালসিয়াম, আমিষ, শর্করা, পটাশিয়াম থায়ামিন, লিগন্যান, নায়াসিন, রিবোফ্লাভিন, আইসোফ্ল্যাভোন, স্যাপোনিন ও আয়রন। কাঁঠালের মত কাঁঠালের বীচিতেও রয়েছে মানব দেহের প্রয়োজনীয় অনেক পুষ্টি উপাদান। কাঁঠাল শক্তির উৎস, রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, হাড় মজবুত ও শক্ত করে, রক্তস্বল্পতা রোধ করে, দুরারোগ্য ব্যাধি প্রতিরোধ করে, চোখ ভালো রাখে তাই স্বাস্থ্যকর ফলের তালিকায় সবার উপরে স্থান পেয়েছে কাঁঠাল।


কাঁঠাল সব রকমের পুষ্টিগুণে ভরপুর রসালো ফল। কাঁঠালই একমাত্র ফল যার পুষ্টিগুণ (ভিটামিন এ) দেহে ছয় মাস পর্যন্ত থাকে। হলুদ রং-এর কাঁঠালের কোষ ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ খাবার। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ভিটামিন-এ চাহিদা পূরণ করতে দিনে ৩-৪টি কোষই যথেষ্ট। ১০০ কিলো ক্যালরি খাদ্য শক্তি পেতে দরকার মাত্র ৪-৫টি কোষ।


কাঁঠাল হল পুষ্টি উপাদানের খনি। কাঁচা পাকা দুই ভাবেই কাঁঠাল খাওয়া যায়, এই ফলের সবকিছুই ব্যবহৃত হয়। কাঁঠালের উপরের কতু বা কত্তা গবাদি পশুর খাদ্য আর বাকি সব কিছু মানুষের খাদ্য। কাঁঠালের বীচি ও মাঝখানের কাণ্ড সবজি হিসেবে খাওয়া যায়। কাণ্ডকে আঞ্চলিক ভাষায় মোলা বলে। কাঁঠালের কোন কিছুই ফেলনা নয়।


কাঁঠালের সবচেয়ে বড় গুণ কোলেস্টেরল





ভিটামিন-সি মানবদেহে প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হয় না। ভিটামিন-সি এর অন্যতম উৎস হল কাঁঠাল। ভিটামিন-সি দাঁতের মাড়ি শক্ত করে এবং জ্বর, সর্দি-কাশি সাধারণ রোগের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। ভিটামিন সি দেহের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঠেকায় এবং রক্তের শ্বেত-কণিকার কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভিটামিন-বি৬ সমৃদ্ধ কাঁঠাল হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। কাঁঠালে ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস থাকায় উচ্চ রক্তচাপ, পাইলসের, ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার, টিউমার, আলসার এবং বার্ধক্য প্রতিরোধের প্রতিরোধক হল কাঁঠাল।


কাঁঠালে প্রচুর ভিটামিন-এ ও বিটা ক্যারোটিন থাকায় রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে। ভিটামিন-এ এর অভাবে ত্বক খসখসে হয়ে যায় কাঁঠাল সেই অভাবের ঘারতি দূর করে হারানো লাবণ্যতা ফিরিয়ে আনে সাহায্য করে।


উচ্চমানের অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ ফল কাঁঠাল। মানব দেহকে ক্ষতিকর ফ্রির‌্যাডিকেলস থেকে রক্ষা করে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। কাঁঠালের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং বলিরেখা কমায়। কাঁঠালে থাকা ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়ামের হাড় গঠন ও মজবুত করতে এবং রক্ত সংকোচন প্রক্রিয়া সমাধানে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।


পটাশিয়ামের উৎকৃষ্ট উৎস কাঁঠাল। কাঁঠালের পটাসিয়াম এবং সোডিয়াম মানব দেহের ইলেকট্রোলাইট ব্যালেন্সকে ঠিক রাখতে সাহায্য করে ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং হার্টও ভাল থাকে।


কাঁঠালে আছে ম্যাঙ্গানিজ যা রক্তে চিনি বা শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। কাঁঠালে থাকা কপার থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং আয়রন মানব দেহে রক্তে লোহিত-কণিকা বাড়িয়ে রক্তাশূণ্যতা দূর করতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে।


ফাইবার-সমৃদ্ধ ফল কাঁঠাল। তাই কাঁঠাল হজমশক্তি বৃদ্ধি করায় পেটও পরিষ্কার রাখে। নার্ভাসনেস, টেনশন কমাতে, বদহজম রোধ করে, থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণে কাঁঠাল বেশ কার্যকরী। আঁশালো কাঁঠাল কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।


গর্ভবতী মহিলারা কাঁঠাল খেলে গর্ভ-ধারণকৃত শিশু ও মা সব ধরনের পুষ্টির অভাব পূরণ হয় এবং গর্ভস্থ-সন্তানের শিশু স্বাভাবিক বৃদ্ধি হয়। পাকা কাঁঠাল খেলে দুগ্ধ-দানকারী মায়ের দুধের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।


কাঁঠালের বীচিতে আছে জীবাণুনাশক গুণ। বীচির পটাশিয়াম দেহের ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে। বীচি ভর্তা ও তরকারি হিসেবে এবং ভেজে খাওয়া যায়।

কাঁঠালের সবচেয়ে বড় গুণ কোলেস্টেরল






প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁঠালের বীচিতে ৬.৬ গ্রাম প্রোটিন, ০.৪ গ্রাম শ্বেতসার, ১.২ মি.গ্রা ভিটামিন বি-১, ১১মি.গ্রা ভিটামিন-সি, ০.১১ মি.গ্রা ভিটামিন বি-২ পাওয়া যায়। বীচি আমিষসমৃদ্ধ সব্জি।


কাঁঠালের বীচি বিভিন্ন সংক্রামক রোগের প্রতিরোধক। বীচির অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল উপাদান মানব দেহ থেকে জীবাণু দূরে রাখতে সক্ষম হয় বলে দেহে নানা রোগ বাসা বাঁধতে বাঁধাগ্রস্ত হয়। আমিষের চাহিদা পূরণ করে, কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রকোপ কমায়, কোলোনের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে।


কাঁঠালের বীচির প্রাকৃতিক উপাদান ক্যালসিয়াম, জিঙ্ক, পটাশিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম এবং কপার বিভিন্ন রোগ থেকে দূরে রেখে দেহ ও মন সার্বিকভাবে চাঙ্গা রাখতে সাহায্য করে। বীচিতে রয়েছে রাইবোফ্লেবিন ও থিয়ামিন নামক দুটি উপাদান, যা মানব দেহে এনার্জির ঘাটতি দূর করে থাকে। পেশী গঠনে, রক্তাশূণ্যতা দূর করতে, মেটাবোলিজম রেট বাড়াতে কাঁঠালের বীচি দারুণ কার্যকর।


বীচিতে বিভিন্ন মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস থাকায় মস্তিষ্কের কেমিকেল ব্যালেন্স করে ও চাপ কমায়। কাঁঠালের বীচি পাউডার করে নিয়মিত খেলে বদহজমের সমস্যা দূর হয় এবং হজম-ক্ষমতাও বাড়ায় ।


কাঁঠালের বীচি রূপচর্চা হিসেবেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। বীচি পাউডার করে মধু বা দুধের সাথে মিশে পেস্ট বানিয়ে নিয়মিত মুখে লাগালে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে উপকার পাওয়া যায়।

কাঁঠাল গাছ কাঠ দিয়ে আসবাবপত্র তৈরি হয়, গাছের আঠালো কষ দিয়ে পাত্রের ছিদ্র বন্ধ করা যায়।


সহবাসী উদ্ভিদ কাঁঠাল গাছ প্রায় সাধারণত ৮-১০ মিটার লম্বা হয়ে থাকে, পাতা গাঢ় সবুজ। এ গাছের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল দুধের মত সাদা আঠালো তরুক্ষীর। সাধারণত উঁচু জমি এবং লাল মাটিতে কাঁঠাল গাছ ভাল জন্মে। কাঁঠালের বীজ থেকে চারা হয়। তবে বিভিন্ন কলমের মাধ্যমেও চারা তৈরি করা যায়।





No comments: