আম মানব দেহে রাজার মতই শাসন করে
ফলের রাজা আম, আম মানব দেহে রাজার মতই শাসন করে। আমে আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি যা দেহে শক্তি তৈরি করে। আমের ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, আয়রন, আঁশ ও খনিজ উপাদান দেহকে সুস্থ ও সবল রাখতে সাহায্য করে। আম শুধুমাত্র সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ফলই নয়, এই ফল ওষুধের মত কাজ করে মানব দেহ সুস্থ রাখে।
প্রতি ১০০ গ্রাম (৩.৫ আউন্স) আমের( Mango) পুষ্টিগত মান
| |
শক্তি
|
250 কিজু (60 kcal)
|
খাদ্যে ফাইবার
|
1.6 g
|
থায়ামিন (বি১)
|
(2%)0.028 mg
|
ন্যায়েসেন (বি৪)
|
(4%)0.669 mg
|
শর্করা
|
15 g
|
স্নেহ পদার্থ
|
0.38 g
|
প্রোটিন
|
0.82 g
|
চিনি
|
13.7
|
বেটা ক্যারোটিন
|
(6%)640 μg
|
ভিটামিন এ সমতুল্য
|
(7%)54 μg
|
লুটিন জিজানথেন
|
23 μg
|
ভিটামিন বি৬
|
(9%)0.119 mg
|
কোলিন
|
(2%)7.6 mg
|
ভিটামিন সি
|
(44%)36.4 mg
|
ভিটামিন ই
|
(6%)0.9 mg
|
ভিটামিন কে
|
(4%)4.2 μg
|
প্যানটোথেনিক অ্যাসিড (বি৫)
|
(4%)0.197 mg
|
রিবোফ্লাভিন (বি২)
|
(3%)0.038 mg
|
ক্যালসিয়াম
|
(1%)11 mg
|
ফোলেট (বি৯)
|
(11%)43 μg
|
দস্তা
|
(1%) 0.09 mg
|
কার্বোহাইড্রেট
|
17 g
|
ম্যাগনেসিয়াম
|
(3%)10 mg
|
ফসফরাস
|
(2%) 14 mg
|
পটাশিয়াম
|
(4%) 168 mg
|
লোহা
|
(1%)0.16 mg
|
ম্যাঙ্গানিজ
|
(3%) 0.063 mg
|
সোডিয়াম
|
(0%) 1 mg
|
চর্বি
|
0.27g
|
একক
μg = মাইক্রোগ্রামসমূহ,
mg = মিলিগ্রামসমূহ
IU = আন্তর্জাতিক এককসমূহ
|
ঋতুর বৈচিত্র্যের দেশ বাংলাদেশ, নানান রকম সুস্বাদু ফলের দেশ বাংলাদেশ। রকমারি সুস্বাদু ফলের ভীরে সব মানুষের মন কেড়ে নিয়ে জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করেছে আম। চাহিদা দিক থেকে আমের অবস্থান সব ফলের উপরে। সারা পৃথিবীতেই আম অতি কদরের ফল তাই সারা বিশ্বে আমের রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। চাহিদার অন্যতম কারণ হল আম যেমন সুস্বাদু তেমন পুষ্টিগুণের অধিকারী; তার উপর আমের আছে চমৎকার স্বাস্থ্য উপকারিতা। এই জন্য আমকে বলা হয় ফলের রাজা।
ভারত ও বাংলাদেশে যে প্রজাতির আমের চাষ হয় ঐ প্রজাতির আমের বৈজ্ঞানিক নাম Mangifera indica, উরি আমের বৈজ্ঞানিক নাম Mangifera laurina, ইংরেজি নাম Mango, আমাদের দেশের স্থানীয় নাম আম। ফলটি Anacardiaceae পরিবারের সদস্য। mango নামের উৎপত্তি তামিল ম্যান-গে বা ম্যান-কি থেকে। পর্তুগিজরা ভারতে বসতি স্থাপন সময় আম-কে manga বলত। আম স্প্যানিশ ও ইংরেজি ভাষাভাষী দেশগুলোতে mango নামে পরিচিত। আম গ্রীষ্ম ও উপগ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চল ব্যাপকভাবে উৎপন্ন হয়। আমের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে সংস্কৃতে এই ফলের নামকরণ করা হয় আম। আম শব্দের অর্থ রসদ বা মজুদ খাদ্য। উৎপত্তির দিক থেকে আম ফল বা আম গাছের ইতিহাস সুপ্রাচীন।
এই উপমহাদেশের সব চাইতে জনপ্রিয় সুস্বাদু ফল হল আম। গন্ধ এবং স্বাদ উভয়ে মিলে ফলটাকে করেছে অতুলনীয়। বহু গুণে গুণান্বিত উপকারী ফল আম। পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ উপকারী ফলটি দুরারোগ্য রোগের মত রোগেরও প্রতিরোধ ক্ষমতা রাখে। কাঁচা ও পাকা উভয় ভাবেই আম জনপ্রিয়। আম কাঁচা-পাকা যেভাবেই খাওয়া হোক তা মানব দেহের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কাঁচা আমের পুষ্টিগুণ পাকা আমের তুলনায় বেশি। কাঁচা ও পাকা সব ধরণের আম দিয়ে আচার, চাটনি, জেলি, আমসত্ত্ব, মোরব্বা, জ্যাম ও জুস তৈরি করা হয় আবার কাঁচা আম দিয়ে ভর্তা এবং নানা রকম টক তরকিরী রান্না করা হয়। দুধ-আম-ভাত এই উপমহাদেশের অনেকের প্রিয় খাবার। আম-কাঁঠালের মৌসুমে বাংলাদেশে বোন-মেয়ের জামাইদের নিমণ্ত্রণের এবং তাদের শ্বশুর বাড়িতে আম-কাঁঠাল পাঠানোর রেওয়াজ আছে।
সাধারণত কাঁচা আমের রং সবুজ এবং পাকা আম হলুদ, কমলা, সবুজাভ হলুদ, মিশ্র রঙের লাল আভাযুক্ত রং হয়ে থাকে এমনকি কিছু জাতের আম আছে পাকার পরও সবুজ থাকে। এই ফলের আকৃতির বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে বৃত্তাকার, ডিম্বাকার, গোলাকার, হৃৎপিন্ডাকার ও সরু লম্বাকার। আম এক আঁটিযুক্ত, কিছুটা আঁটসাঁট, শাঁসালো, মসৃণ, রসালো ফল। উন্নত জাতের সব আমই মিষ্টি তবে স্বাদের তারতম্য হয়ে থাকে। বাংলাদেশের স্থানীয় কিছু দেশি আম আছে, স্থানীয় আমকে গুটি আমও বলা হয়। এই আমের নির্দিষ্ট কোনো নাম নেই, স্বাদেও ভিন্ন রকম কোনটা টক কোনটা মিষ্টি আবার কোনটা টক-মিষ্টি।
বিশেষজ্ঞের মতে, আম মায়ানমার, আসাম (ভারত) ও বাংলাদেশসহ তৎকালীন ভারত উপমহাদেশের পূর্বাঞ্চলের স্থানীয় ফল; অন্য প্রজাতি Mangifera laurina-এর উৎপত্তি সম্ভবত মালয়। ৬৩২-৬৪৫ খ্রিস্টাব্দের মাঝামাঝি সময়ে চীনের বিখ্যাত পর্যটক হিউয়েন-সাং ভারত ভ্রমণে এসেছিলেন। ধারণা করা হয় হিউয়েন-সাংই প্রথম বহির্বিশ্বে আমের পরিচয় করান। ১৪ শতকে আমের বর্ণনা লিপিবদ্ধ করেন ইবনে বতুতা, তিনি মরক্কোর পর্যটক। মোগল সম্রাট আকবরের শাসন আমলে (খ্রিঃ১৫৫৬-১৬০৫) ভারতের লাখবাগের দারভাঙার কাছাকাছি সম্রাট আকবর প্রায় এক লক্ষ আম গাছ লাগিয়েছিলেন। ঐ বাগানটিই বলা হয় এই উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় আমবাগান। আমকে প্রাচ্যের ফলের রাজা আখ্যা দিয়েছেন প্রখ্যাত উদ্যানবিদ পোপেনো আমকে।
আম গাছ বাংলাদেশের জাতীয় গাছের প্রতীক আর আম ভারতের জাতীয় ফল। ভারতেই পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক আম উৎপন্ন হয়। কয়েক হাজার বছর আগে থেকেই ভারতীয় উপমহাদেশে আমের চাষ করা হচ্ছে। খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ-পঞ্চম শতাব্দী থেকে পূর্ব-এশিয়াতে আমের প্রচলন শুরু হয় আর দশম শতাব্দীর দিকে আমের চাষ করা শুরু হয়। ভারতীয় উপমহাদেশ ও পূর্ব-এশিয়া বাইরে সর্ব প্রথম ব্রাজিলে আম গাছ রোপণ করা হয় আনুমানিক ১৭০০ সালে। তারপর ফলটি ১৭৪০ সালের দিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজে পৌঁছায় এরপর চলে যায় মেক্সিকো। কিছু বুনো প্রজাতির আম জন্মে আমেরিকার গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলে। উষ্ণ প্রধান জলবায়ুতে আম গাছ জন্মাতে সক্ষম বলে বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় সব অঞ্চলেই আমের চাষ করা হয় থাকে। প্রায় ৩৫ প্রজাতির আম আছে পৃথিবীতে।
বাংলাদেশে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী ও দিনাজপুর ভারতের মুর্শিদাবাদ, মালদহ, নদীয়া-এ প্রচুর পরিমাণে আমের চাষ করা হয়। ভারতীয় উপমহাদেশীয় অঞ্চলে আম বিভিন্ন জাতের হয়ে থাকে। যেমন- মল্লিকা, ল্যাংড়া, ফজলি, হাড়িভাঙ্গা, খিরসা, গোপালভোগ, অরুণা, আম্রপালি, মিশ্রীদানা, সুবর্ণরেখা, নীলাম্বরী, কাঁচামিঠা, তোতা-পূরী, কালীভোগ, আলফানসো, সূর্যপূরী, বারোমাসি, কারাবাউ, গুটলি, কেউই সাউই, ছাতাপরা, গোপাল খাস, কেন্ট, পাহুতান, ত্রিফলা ইত্যাদি। বাংলাদেশে প্রায় ১০০ জাতের আম পাওয়া যায়। এশিয়ার সবচেয়ে বৃহৎ আম বাজার হল ‘কানসাট আম বাজার’।
আমে আছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস উপাদান যা বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার ও কার্ডিওভাসকুলার রোগের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে মানব দেহকে রক্ষা করে থাকে। এই ফল আঁশ বা ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় কোলেস্টেরল ও গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এছাড়াও যক্ষ্মা ও রক্তাল্পতা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। দেহের ক্ষয় রোধ করে ও স্থলতা কমিয়ে দেহ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আম।
আম ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। চর্ম রোগ প্রতিরোধে আম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলের ক্যারোটি ও ভিটামিন-এ চোখের জন্য খুবই দরকারি উপাদান যা অন্ধত্ব দূর করে দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়। দাঁত, মাড়ি, ত্বক ও হাড় সুস্থ রখতে সাহায্য করে ভিটামিন-সি। আমে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-ই যা ত্বক ও চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এই ফলের ভিটামিন-এ ও ভিটামিন-সি মানব দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
হার্ট ডিজিজ প্রতিরোধ করে বিটা ক্যারোটিন যা পাওয়া যায় আমে। আমের টারটারিক অ্যাসিড, ম্যালিক অ্যাসিড, সাইট্রিক অ্যাসিড দেহের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, রক্তের সুগার লেভেলকে বাধা প্রদান করে ডায়াবেটিসের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এই ফলে আছে ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়াম যা অ্যাসিডিটি বা অম্বল, পেশি সংকোচন, স্ট্রেস ও হার্টের উপশম করতে সাহায্য করে। আমের ক্যালসিয়াম হাড় ও দাঁত সুস্থ ও সবল রাখতে সহায়তা করে আর আয়রন দেহের রক্ত পরিষ্কার রাখে এবং রক্তাল্পতা ও কলেরা প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
আম অ্যাল্কালাইন জাতীয় খাবার তাই হজমশক্তি ও অ্যাসিডিটি উপশমে ভালো কাজ করে এবং ত্বক উজ্জ্বল ও লাবণ্য করে। আমের কার্বোহাইড্রেট কর্মশক্তি বাড়িয়ে দেহে শক্তির জোগান দেয়। দেহ থেকে ঘামের মাধ্যমে পানি ও লবণ বের হয়ে যায় সেই লবণ ও পানির ঘাটতি পূরণের করে আম। আম দেহে শর্করার মাত্রা ঠিক রাখলেও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অতিরিক্ত আম খাওয়া ক্ষতিকর এছাড়া আমের তেমন কোন অপকারিতা নেই বললেই চলে।
মানব দেহ ঠাণ্ডা রাখতে এবং হিট স্ট্রোকের ঝুঁকিতে বাধা প্রদান করতে সাহায্য করে কাঁচা আম বা কাঁচা আমের জুস। পটাশিয়ামের খুব ভালো উৎস হচ্ছে কাঁচা আম যা উচ্চ রক্তচাপ ও হৃৎস্পন্দন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। কাঁচা আম পেকটিন সমৃদ্ধ তাই লবণ, মধু ও কাঁচা আম এক সাথে মিশিয়ে খেলে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল রোগের চিকিৎসায় অত্যন্ত ফলদায়ক। কাঁচা আম বিটা ও আলফা উভয় ক্যারোটিনের মত ফ্লাভনয়েড সমৃদ্ধ বলে দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটিয়ে চোখ ভাল রাখতে ও অ্যাজমা হওয়ার সম্ভাবনা কমাতে সহায়তা করে। স্কার্ভি সারাতে বেশ কার্যকর হচ্ছে কাঁচা আমের আমচুর। এসিডিটির সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে, বদহজম থেকে রক্ষা পেতে, ওজন কমাতে, চর্বি কাটতে কাঁচা আমের জুড়ি নেই। কাঁচা আমে থাকে অ্যান্টিবায়োটিক ক্ষমতা যা রোগে প্রতিরোধে সহায়ক। মানব দেহে নানা রকম রোগ সৃষ্টিকারী উপাদান টক্সিন বিন্যাস করতে কাঁচা আমের বিকল্প নেই। ফলের রাজা আম, আম মানব দেহে রাজার মতই পরিচালনা করে।
আমের বীজ বা আঁটি ডায়রিয়া সারাতে খুবই কার্যকর, আঁটি শুকিয়ে গুঁড়া করে পানির সঙ্গে মিশিয়ে খেতে হয়। আম রক্তের শর্করার পরিমাণ বাড়ায় আর আমের আঁটি কমায়; অর্থাৎ রক্তের শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে আমের আঁটি। কাঁচা আমের নরম আঁটি অতিরিক্ত ওজন ও বাড়তি কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। কাঁচা আমের বীচি কাঁচা অবস্থায় এমনিতেই চিবিয়ে খাওয়া যায় অথবা শুকিয়ে গুঁড়ো করে দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে হয়। খুশকি দূর করতে বেশ কার্যকরী আমের আঁটি। আঁটি শুকিয়ে গুঁড়ো করে পানির সাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মাথার ত্বকে লাগাতে হবে, এতে চুল পড়া অনেকটা রোধ করে।
আম ও আমের আঁটি মত পাতা ও মুকুল বেশ উপকারী। আম গাছের পাতা ডায়াবেটিসের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। ৬/৭টি আম পাতা ভাল করে ধুয়ে পরিষ্কার করে সিদ্ধ করে অথবা পাতা শুকিয়ে গুড়া করে পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খেলে ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে, জ্বর ও বুকের ব্যথা উপশম করতে সাহায্য করে। দাঁতের ব্যথার উপশম করে আম গাছের কচি পাতার রস। প্রস্রাবের জ্বালা-পোড়া, পুরনো অমাশয় ও পাতলা পায়খানায় টনিকের মত কাজ করে আমের শুকনো মুকুল। শুধু আম ফলের রাজা নয়, আমের সব কিছুই রাজা, তাই সব কিছু দিয়েই আম দেহে রাজার মতই শাসন করে।
আমের নাম এবং কোন আম কখন পাকে
| |
আমের নাম
|
আম পরিপক্বতার বা পাকার সময়
|
গোবিন্দভোগ
|
মে মাসের শেষের দিক থেকে
|
গোপালভোগ
|
জুনের প্রথম দিক থেকে
|
গোলাপখাস
|
জুনের প্রথম দিক থেকে
|
রানিপছন্দ
|
জুনের প্রথম সপ্তাহের শেষের দিক থেকে
|
ল্যাংড়া
|
জুনের মাঝামাঝি দিক থেকে
|
ক্ষীরশাপাত বা হিমসাগর
|
জুনের মাঝামাঝি দিক থেকে
|
হাড়িভাঙ্গা
|
জুনের তৃতীয় সপ্তাহের দিক থেকে
|
লক্ষ্মণভোগ
|
জুনের তৃতীয় সপ্তাহের দিক থেকে
|
আম্রপালি
|
জুলাই-র প্রথম দিক থেকে
|
মল্লিকা
|
জুলাই-র প্রথম দিক থেকে
|
ফজলি
|
জুলাই প্রথম সপ্তাহের শেষের দিক থেকে
|
আশ্বিনা
|
জুলাই শেষ সপ্তাহের প্রথম দিক থেকে
|
কলম পদ্ধতিতে আম গাছের বংশবিস্তার করলে মূল আমের বৈশিষ্ট্য অক্ষুণ্ণ থাকে, বীজ বা আঁটি থেকে বংশ বিস্তার করলে মূল বৈশিষ্ট্যের কিছুটা তারতম্য ঘটে। কলম পদ্ধতিতে দ্রুত ফল আসে আর বীজ থেকে উৎপন্ন গাছে ফল আসতে অনেক দেরি হয় এবং বহু বছর ফল দেয় কলম গাছে তুলনায়। আম গাছের পাতা চিরসবুজ ও ঘন, কালচে বর্ণের খসখসে বাকল, কাণ্ড বৃহদাকার ও বিস্তৃত শাখা-প্রশাখা। আম গাছ সাধারণত ১১৫-১৩০ ফিট লম্বা এবং ৩৩ফিট ব্যাসার্ধ হয়ে থাকে। আম গাছ বহু বছর বাঁচে। আম গাছের কাঠ মোটা আঁশযুক্ত ধূসর বর্ণের। বসতবাড়ির আশেপাশেও আম গাছ লাগনো হয়।
বিভিন্ন প্রকার আমের নাম
মালগোভা, জগৎ মোহিনী, কাকাতুয়া, ফজলি, পেয়ারা ফুলী, আম্রপালি, লক্ষনভোগ, হীরালাল বোম্বাই, সুরমা ফজলি, আশ্বিনা, গুটি ল্যাংড়া, পাটুরিয়া, পালসার, আমিনা, রাজলক্ষী, মাধুরী, শীতল পাটি, পূজারী ভোগ, দিলসাদ, বিশ্বনাথ চ্যাটার্জি, বেগম বাহার, রাজা ভুলানী, ব্যাঙ্গলোরা, বন খাসা, পারিজা, ক্ষীরমন, সেন্দুরা গুটি, হাড়িভাঙ্গা, আলফানসো, ল্যাংড়া, গৌড়মতি, গোপালভোগ, মধু চুষকী, বৃন্দাবনি, লখনা, তোতাপুরী (ম্যাট্রাস), রাণী পছন্দ, হিমসাগর, ক্ষিরসাপাত, বাতাসা, লাড্ডু সান্দিলা, ছোটীবোম্বাই, কালিজংগী, দ্বারিকা ফজলি, ক্ষুদি ক্ষিরসা, বোম্বাই, সুরমা ফজলি, সুন্দরী, বৈশাখী, রসকি জাহান, সিন্দি, ভূতো বোম্বাই, গোলেক, বারি আম৭, কালী বোম্বাই, চকচকা, ভ্যালেনাটো, ওকরাং, মালদা, শেরীধণ, শামসুল সামার, বাদশা, রস কি গুলিস্তান, কন্দমুকাররার, নাম ডক মাই, বোম্বাই (চাঁপাই), ক্যালেন্ডা, রুবী, বোগলা, হিমসাগর রাজশাহী, কালুয়া (নাটোর), চৌষা লখনৌ, সিডলেস, কালিভোগ, বাদশাভোগ, কুষ্ণকলি, পাটনাই, গুটি বাগান বিলাস, লিতা গুটি, রং ভীলা, বুদ্ধ কালুয়া, চন্দনখোস, দুধ কুমারী, ছাতাপোরা, চোষা, জিলাপি কাড়া, নাবি বোম্বাই, সিন্দুরী ফজলী, আমব্রা, গুলাবজামুন, আলম শাহী, অস্ট্রেলিয়ান, জামাই পছন্দ, লক্ষণভোগ, ভাদুরিয়া কালুয়া, চিনি ফজলী, মল্লিকা, সূর্যপুরী, হায়াতী, পাউথান, দুধস্বর, গোলাপ খাস, বেনারসী ল্যাংড়া, পাটনামজাথী, জালিবান্দা, মিছরিদানা, নাক ফজলী, সুবর্ণরেখা, কালা পাহাড়, বারি আম-২, বউ ভুলানী, জমরুদ, অরুনা (হাইব্রিড-১০), নীলাম্বরী, ফোনিয়া, চৌষা, ডায়াবেটিক আম, সিন্ধু, বোগলা গুটি, রাজভোগ, দুধস্বর (ছোট), মোহন ভোগ, হাঁড়িভাঙ্গা, টিক্কা ফরাশ, আম্রপলি (বড়), হিমসাগর (নাটোর), ফারুকভোগ, রুমানি, টারপেন টাইন, কুমড়া জালি, দুধিয়া, মহারাজ পছন্দ, ম্যানিলা, পিয়ারী, জান মাহমুদ, সামার বাহিশত রামপুর, মাডু, লা জবাব মালিহাবাদ, লাইলী আলুপুর, নীলম, মিশ্রীভোগ, পদ্মমধু, বাঙামুড়ী, মায়া, দাদাভোগ, শরবতি ব্রাউন, আলফান, রত্না, মিঠুয়া, সামার বাহিতশত আলীবাগ, গোলাপবাস, জুলী, ভেজপুরী, কালুয়া গোপালভোগ, কলম সুন্দরী, বনারাজ, ম্যাডাম ফ্রান্সিস, মিক্সড স্পেশাল, মোহাম্মদ ওয়ালা, সফেদা মালিহাবাদ, খান বিলাস, জাফরান, মধু মালতী, জিতুভোগ, পলকপুরী, কাকরহিয়া সিকরি, পাথুরিয়া, বোম্বে কলন, কেনসিংটন, কাকরহান, মিছরিদমদম, সামার বাহিশ্ত, মানজানিল্লো নুনেজ, নাজুকবদন, ফারুকভোগ, রুমানি, টারপেন টাইন, কেনসিংটন, কাকরহান, মিছরি দমদম, সামার বাহিশ্ত, মানজানিল্লো নুনেজ, নাজুকবদন, বোম্বে সায়া, বোম্বে গ্রিন, তোহফা, কাচ্চা মিঠা মালিহাবাদ, তৈমুরিয়া, জাহাঙ্গীর, কাওয়াশজি প্যাটেল, নোশা, জালিবাম, বাগান পল্লি, ভারতভোগ, ফজরী কলন, সাবিনা, সেন সেশন, লতা বোম্বাই, আল্লামপুর বানেশান, আর-২ এফ-২, শ্রাবণী, ইমামপছন্দ, জনার্দনপছন্দ, কৃষ্ণভোগ, সারুলী, ইলশে পেটী, কলম বাজি, ইয়াকুতিয়া, গুটী, ভুজাহাজরী, ম্যাটরাজ, পুনিত (হাইব্রিড-১৩), বেলখাস, শ্রীধন, আমান খুর্দ বুলন্দাবাগ, পালমার, কারাবাউ, অ্যামিলী, কোরাকাও ডি বই, নিসার পছন্দ, পাহুতান, বোররন, হিন্দি, সফেদা বাদশাবাগ, র্যাড, আরুমানিস, বাংলা ওয়ালা, মোম্বাসা, রোসা, ক্যাম্বোডিয়ানা, ফজরী জাফরানী, বোম্বাইখুর্দ, এক্সট্রিমা, বদরুল আসমার, শাদওয়ালা, সামার বাহিশত কারানা, এসপাডা, বাশীঁ বোম্বাই, কর্পূরা, হুসনে আরা, সফেদা লখনৌ, শাদউল্লা, আজিজপছন্দ, কর্পূরী ভোগ, জিল, সারোহী, গ্লেন, টমি অ্যাটকিনসন, স্যাম-রু-ডু, মৌচাক, মহানন্দা, তোতাপুরী, বাউ আম-৩, বারি-৩, পুকুর পাড়, কোহিতুর, বিলু পছন্দ, কাগরী, চিনিবাসা, দুধ কুমার, মন্ডা, লাড্ডু, সীতাভোগ, শোভা পছন্দ, গৃঠাদাগী, ছোট আশ্বিনা, ঝুমকা, দুসেহরী, কালী ভোগ, ভবানী চরুষ, বেগম ফুলি, আপুস, ফজরীগোলা, সফেদা, আনোয়ার, রাতাউল, বাবুই ঝাঁকি, মনোহারা, রাংগোয়াই, গোল্লা, কাজি পছন্দ, রাঙামুড়ী, বড়বাবু, করল্লা, জালিখাস, কালিয়া, সাটিয়ারকরা, সফদর পছন্দ, ছুঁচামুখী, আলফাজ বোম্বাই, মধুমনি, মিশ্রীকান্ত, গিড়াদাগী, কুয়া, পাহাড়ী, বিড়া, দ্বারভাঙ্গা, বারি আম-৪, আরাজাম, গোবিন্দ ভোগ, কাঁচামিঠা, মতিমন্ডা, পোল্লাদাগী, দাদভোগ, শ্যামলতা, মিশ্রীদাগী, কিষানভোগ, ভারতী, বারোমাসি, দেওভোগ, বারি-৮, আম্রপলি(ছোট), সিদ্দিক পছন্দ, লতা, বাদামী, আনারস, জহুরী, রাখাল ভোগ, গুটি মালদা, বারি, আম-৬, রগনী, বাউনিলতা, গৌরজিত, মাবরোকা, হিমাউদ্দিন, ফ্লোরিডা, কেইট, ইরউইন, নাওমী, কেন্ট, টাম অ্যাটকিন্স, আলফন্সো, নারিকেল ফাঁকি, বারি আম-৫, এফটি আইপি বাউ আম-১১(কাচা মিঠা-১), এফটি আইপি বাউ আম-৬(পলিএ্যাম্বব্রায়নী-১), এফটিআইপি বাউ আম-১২(কাচা মিঠা-২), এফটি আইপি বাউ আম-১৩(কাঁচামিঠা-৩), এফটি আইপি বাউ আম-৫(শ্রাবণী-২), কাদের পছন্দ, এফটি আইপি বাউ আম-৪, দিল্লির লাড়ুয়া, টিয়াকাটি, এফটি আইপি বাউ আম-৯(শৌখিন চৌফলা), এফটি আইপি বাউ, আম-১(শ্রাবণী-১), এফটি আইপি বাউ আম-৭(পলি এ্যাম্বব্রায়নী-২), এফটি আইপি বাউ আম-২ (সিঁন্দুরী), এফটি আইপি বাউ আম-১০(শৌখিন-২), এফটি আইপি বাউ আম-৩(ডায়াবেটিক), এফটিআইপি বাউ আম-৮ (পলিএ্যাম্বব্রায়নী-রাংগুয়াই-৩,
তথ্যসূত্র : ইন্টারনেট ও বই থেকে তথ্য-সংগৃহীত
No comments:
Post a Comment