


উন্নত ও উঁচু মানের পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ফল জাম্বুরা ফল। জাম্বুরায় থাকে বায়োফ্লভনয়েড আর ফ্ল্যাভোনয়েড, বায়োফ্লভনয়েড স্তন ক্যান্সারের আর ফ্ল্যাভোনয়েড মুখের গহ্বর এবং ফুসফুসের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।এই ফলটি মানব দেহের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে, তা হল ফ্রি র্যাডিকেলের বিরুদ্ধে সংগ্রামে
সহযোগিতা করে।পটাশিয়াম, বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-বি, ফলিক অ্যাসিডসহ ইত্যাদি মানব দেহের জন্য দরকারি উপাদান পাওয়া যায় এই জাম্বুরায়। দেহের রোগ নিরাময় ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে এবং প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়াতে সাহায্য করে জাম্বুরা।এক গ্লাস জাম্বুরার জুস বা সমপরিমাণ কোষ/কোয়া একদিনের প্রয়োজনীয় উপাদানের চাহিদা পূরণ করতে পারে।
প্রতি ১০০ গ্রাম জাম্বুরার ( Pomelo) পুষ্টিগত মান
| |
খাদ্যশক্তি
|
38 kcal
|
খাদ্যআঁশ
|
1 g
|
নিয়াসিন
|
0.22 mg
|
থায়ামিন
|
0.038 mg
|
শর্করা
|
8.5 g
|
লিপিড
|
0 g
|
স্নেহ পদার্থ
|
0.3 g
|
প্রোটিন
|
0.5 g
|
বেটা ক্যারোটিন
|
12o μg
|
কোলেস্টেরল
|
0 g
|
ভিটামিন এ
|
8 μg
|
ভিটামিন বি2
|
0.04 mg
|
ভিটামিন বি6
|
0.036 mg
|
ভিটামিন সি
|
105 mg
|
রিবোফ্লাভিন
|
0.027 mg
|
ক্যালসিয়াম
|
37mg
|
খনিজ লবণ
|
0.20g
|
ম্যাগনেসিয়াম
|
6 mg
|
ফসফরাস
|
17 mg
|
ম্যাঙ্গানিজ
|
0.017 mg
|
পটাশিয়াম
|
(216 mg
|
আয়রন
|
0. 2 mg
|
সায়ানোকোবালেমিন
|
0µg
|
সোডিয়াম
|
1 mg
|
খাদ্যতালিকাগত তন্তু
|
1g
|
একক
μg = মাইক্রোগ্রামসমূহ,
mg = মিলিগ্রামসমূহ
IU = আন্তর্জাতিক এককসমূহ
|
বৈজ্ঞানিক নাম Citrus maxima বা Citrus grandis ইংরেজি নাম Pomelo, pummelo বা pommelo আমাদের দেশের স্থানীয় নাম জাম্বুরা। বাংলায় এই ফলের আরেক নাম বাতাবী লেবু। ফলটি Rutaccae পরিবারভুক্ত। জাম্বুরার আদি নিবাস দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়। বাতাবী লেবু বা জাম্বুরা উৎপন্ন হয় চীন, জাপান, দক্ষিণ আফ্রিকা, ফিজি, আমেরিকা, ভারত ও বাংলাদেশে। বাতাবী লেবু বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকমের হয়। বাংলাদেশের জাম্বুরার ভিতরের কোষের রং সাদা, লাল ও গোলাপি।
সাইট্রাস জাতীয় ফলে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফল, জাম্বুরা সাইট্রাস ফলে অন্তর্ভুক্ত ফল। প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি থাকে জাম্বুরায়। যত প্রকারের লেবু আছে তার মধ্যে জাম্বুরা হচ্ছে সর্বাপেক্ষা উৎকৃষ্ট-মানের পুষ্টিগুণ-সম্পূর্ণ লেবু। ভিটামিন সি দেহে আয়রন দ্রুত শুষে নেয় বলে হিমোগ্লোবিন উৎপাদনের গতিও দ্রুত বেড়ে যায়। জাম্বুরার খাদ্য অংশ ছোট ছোট কোয়া বা কোষগুলো পাতলা আঁশের আবরণে ঢাকা থাকে। কোষগুলো আঁশের আবরণসহ খেতে হয়। এই আঁশ পাকস্থলী ও অন্ত্রের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় এবং হজম ও বিপাকক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে।
মুখরোচক জাম্বুরার বড় গুণ হল ক্যালরি কম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবারে পরিপূর্ণ। এই ফলের পুষ্টিগুণের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ক্যান্সারসহ নানা মারাত্মক রোগের বিরুদ্ধে মানব দেহে প্রতিরোধ গড়ে তুলে। প্রোস্টেট ক্যান্সার কোষের ক্ষতিগ্রস্ত DNA মেরামত করতে সাহায্য করে। বিভিন্ন রকম ফাইটোনিউট্রিয়েন্টসে পূর্ণ হচ্ছে লাল রঙের জাম্বুরা, ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ। নারিঞ্জেনিন, ফ্ল্যাভোনয়েড, নারিঞ্জিন এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য, এছাড়াও রয়েছে জ্যান্থিন, লাইকোপেন, বিটা ক্যারোটিন, লিউটিন, পাইরিডক্সিন, থায়ামিন ও ফলিক এসিড; আছে পেকটিন বা খাদ্য আঁশ। সামান্য পরিমাণে আরো আছে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, কপার ও আয়রন।
মিষ্টি ও টক-মিষ্টি স্বাদের জাম্বুরা লেবু জাতীয় ফল। জাম্বুরা খোসা ছাড়িয়ে ভিতরের ছোট ছোট কোষগুলো খেতে হয়। জাতভেদে জাম্বুরার স্বাদের পার্থক্য হয়ে থাকে যেমন, কোনটা বেশি মিষ্টি আবার কোনটা বেশি টক। জাম্বুরা কাঁচা অবস্থায় বাইরের আবরণ গাঢ় সবুজ থাকে পাকলে হালকা সবুজ এবং হলুদ রংয়ের হয়, এই ফলের ভেতরের কোয়া সাদা, লাল ও গোলাপি রংয়ের হয় থাকে। এই ফলের খোসা বেশ মোটা কিন্তু নরম ভিতর দিকটা তুলতুলে ফোম মত। যত রকম লেবু আছে মধ্যে এর সবচেয়ে বড় লেবু হল বাতাবী লেবু মানে জাম্বুরা। জাম্বুরা বিভিন্ন আকারের হয়ে থাকে ছোট-মাঝারি-বড় ইত্যাদি। বাংলাদেশের অঞ্চলভেদে ফলটি নাম অনেক যেমন, জাম্বুরা, বাতাবি লেবু, বাদামি লেবু, ছোলম, বড় লেবু; তবে বেশি পরিচিত জাম্বুরা নামে।
আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা সবারই পছন্দের ফল জাম্বুরা; বিশেষ করে লবণ, কাঁচামরিচ কুচি, ধনে পাতা কুচি কিংবা সামান্য বিট লবণ বা পুদিনা পাতা দিয়ে মাখানো জাম্বুরার ভর্তা। জুস, সালাদ ছাড়াও জাম্বুরা ব্যবহৃত হয় বিভিন্ন চকোলেট বা ক্যান্ডি ও মিষ্টি সুপ তৈরিতে। পুষ্টিগুণে গুণান্বিত মিষ্টি, টক-মিষ্টি স্বাদের মুখরোচক জাম্বুরা ফলে রয়েছে নানা রকম ঔষধিগুণ। উঁচু মানের সাইট্রাস তেল পাওয়া জাম্বুরা খোসা থেকে। বাংলাদেশে এই ফলের বেশ কদর আছে।
বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবীতে বিভিন্ন জাতের লেবু উৎপন্ন হয়। বারি-১ ও বারি-২ জাতের জাম্বুরা খোসা পাতলা ও মাঝারি আকারের হয় আর ফল রসালো ও মিষ্টি, কোষগুলো গোলাপি ও সাদা রংয়ে মিশ্রিত মাঝামাঝি এক রকম রংয়ের হয়ে থাকে। বাংলাদেশের আবহাওয়া লেবু ফল উৎপাদন উপযোগী আবহাওয়া। বাতাবি লেবু বা জাম্বুরার জাতসমূহ- বারি বাতাবিলেবু-১, বারি বাতাবিলেবু-২, বারি বাতাবিলেবু-৩, বারি বাতাবিলেবু-৪, বারি বাতাবিলেবু-৫, FTIP- BAU জাম্বুরা-১, FTIP- BAU জাম্বুরা-২(মিষ্টি)।
পুষ্টিকর ও ঔষধিগুণ সম্পূর্ণ ফল জাম্বুরা। নানা জটিল রোগের প্রতিষেধক হচ্ছে এই ফল। জ্বর সাড়াতে, খাদ্য হজম করতে, রুচি বাড়াতে, মুখের ঘা, মাড়ির রোগ, দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে, গ্যাস্ট্রিক সমস্যা, ক্ষত সারাতে, ওজন কমাতে, ডায়াবেটিস ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে, নিদ্রাহীনতা দূর করতে, পাকস্থলী ও অগ্ন্যাশয়সহ বিভিন্ন রোগ সাড়াতে জাম্বুরা বেশ কার্যকরি ঔষধ। মানব দেহের অতিরিক্ত চর্বি ও আমিষ ভেঙ্গে শিরা-উপশিরার দেয়ালে চর্বি জমতে বাধা দেয় জাম্বুরা। এই ফল ইনফেকশন দূর করতে বেশ কার্যকর।
জাম্বুরায় আছে ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি। রাতকানা রোগ দূর করতে, দৃষ্টিশক্তির ভাল রাখতে ও বৃদ্ধির করতে, মিউকাস মেমব্রেনকে সুস্থ রাখতে, ত্বক ভাল রাখতে প্রয়োজন ভিটামিন-এ, যা প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় জাম্বুরায়। ভিটামিন-সি ক্ষতিকর ফ্রি রেডিক্যালস থেকে রক্ষা করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
জাম্বুরা আছে বায়োফ্লভনয়েড, বায়োফ্লভনয়েড স্তন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি থেকে রক্ষা করে। জাম্বুরায় আছে এমন কিছু এনজাইম যা দেহের চর্বি পুড়ে ফেলতে সহায়তা করে। জাম্বুরা ক্ষতিকারক লাইকোপেন তেজস্ক্রিয় রশ্মির প্রভাব থেকে ত্বককে রক্ষা করে। মেটাবলিজম বাড়িয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে জাম্বুরা। এই ফলে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে জাম্বুরায় যা দেহের পানির চাহিদা পূরণ করে থাকে।
জাম্বুরায় থাকে পেকটিন নামক এক ধরনের খাদ্য আঁশ। ল্যাক্সেটিভ হিসেবে কাজ করে দেহের দূষিত পদার্থ বের করে দিতে এবং রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হৃদরোগ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে পেকটিন। এছাড়াও ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট লিমোনয়েড ক্ষতিকর কোলেস্টেরল LDL-এর উৎপাদনে বাধা প্রদান করতে সাহায্য করে। জাম্বুরায় থাকে নারিঞ্জেনিন, নারিঞ্জেনিন কিডনিতে সিস্ট হতে বাধা দেয়। অ্যান্টিইনফ্লামেটরি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রভাব শুধু কিডনির সিস্ট তৈরিতেই বাঁধা দেয় না বরং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে কিডনির ফোলা কমাতে।
জাম্বুরা আছে লাইকোপেন, লাইকোপেন হচ্ছে এক ধরনের ক্যারোটিনয়েড রঞ্জন। জাম্বুরায় ভিটামিন-সি পরিমাণ বেশি থাকায় লাইকোপোনের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তাই জাম্বুরা টিউমার ধ্বংস করে ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে অত্যন্ত শক্তিশালী ভূমিকা পালন করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট নারিঞ্জেনিন প্রোস্টেট ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধিতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। প্রতিদিন লাইকোপেন সমৃদ্ধ ফল খেলে(জাম্বুরা, টমেটো ও তরমুজ ইত্যাদি)প্রোস্টেট ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি প্রায় ৮৫% কম থাকে; বিশেষ করে স্তন্য ও প্রোস্টেটের ক্যান্সার। এছাড়াও বিভিন্ন জটিল রোগে ঔষধের মত কাজ করে জাম্বুরা।
জাম্বুরায় ভিটামিন-সি এর পরিমাণ বেশি থাকায় রক্তনালীর সংকোচন-প্রসারণ ক্ষমতাও বেড়ে যায়, ফলশ্রুতিতে ডায়াবেটিস, জ্বর, নিদ্রাহীনতা, মুখের ভেতরে ঘা, পাকস্থলী ও অগ্ন্যাশয়ের বিভিন্ন রোগ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে জাম্বুরা।রক্তনালী প্রসারিত করার ফলে রক্তচাপ কমে হৃদযন্ত্র ভালো থাকে। জাম্বুরার বায়োফ্লভনয়েড স্তন ক্যান্সারের প্রতিরোধক।
রক্তের টক্সিন ও অন্যান্য দূষিত পদার্থ দেহ থেকে বের করে বিশুদ্ধ অক্সিজেন সরবরাহে সাহায্য করে জাম্বুরার রস। জাম্বুরার কোষ আঁশযুক্ত হওয়ায় এই ফল পাকস্থলী ও অগ্ন্যাশয়ের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে থাকে। জাম্বুরা অদ্রবণীয় ফাইবার ও শালিজাতীয় এবং খুব কম ক্যালোরির ফল। এই ফলের আঁশ হজম ও বিপাকক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে এবং ক্যালরি কম থাকায় স্থূলকায় দেহের জন্য খুবই কার্যকরি ফল। ওজন কমাতে জাম্বুরার জুস খুবই উপকারী; ওজন কমাতে হলে খাওয়ার প্রায় আধা ঘণ্টা আগে জাম্বুরার জুস খেতে হবে।
জাম্বুরায় থাকা স্যালিসাইলিক এসিড দেহের অজৈব ক্যালসিয়াম ভেঙ্গে ফেলে, অজৈব ক্যালসিয়াম ভেঙ্গে ফেলার কারণে কার্টিলেজ জয়েন্টে জমাট বাঁধতে পারে না ফলে আর্থ্রাইটিস হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। জাম্বুরার জুস কিডনি এবং গল-ব্লাডারের পাথর তৈরিতে বাধা দেয় এবং জন্মানো পাথরকে দ্রবীভূত করে দেহ থেকে বের করে দিতে সাহায্য করে। এক গ্লাস জাম্বুরার জুস একদিনের প্রয়োজনীয় উপাদানের চাহিদা পূরণ করতে পারে।
জাম্বুরায় আছে সোডিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়াম। এসব উপাদানের অভাবে অস্টিওপোরোসিসসহ হাড়ের বিভিন্ন রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে; এই ফল এসব উপাদানের ঘাটতি পূরণ করে হাড়ের বিভিন্ন রোগে হাত থেকে দেহকে রক্ষা করে। স্পার্মাটিন নামক একটি বিশেষ উপাদান থাকে জাম্বুরায়, এই উপাদান বার্ধক্যজনিত রোগ থেকে রক্ষা করে দেহকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। জাম্বুরায় পটাশিয়াম থাকার কারণে ক্রিয়েটিনিন বেশি বা কিডনির বিভিন্ন রোগে ভুগছেন তাঁরা জাম্বুরা না খাওয়াই ভালো। কোনো ঔষধ বা এন্টিবায়োটিক খাওয়ার পরপর জাম্বুরা, কমলা, আঙুর এবং লেবু জাতীয় সব ফল বা এসব ফলের জুস খাওয়া যাবে না; এতে ওষুধের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায় এবং বিষক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবন থাকে।
জাম্বুরা খোসা, পাতা বা ফুল পানি দিয়ে সিদ্ধ করে ঐ সিদ্ধ পানি খেলে কাশি ও মৃগী রোগের উপশমে পাওয়া যায়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সুগন্ধি বাথ বা সুগন্ধি গোছল করার জন্য পানিতে জাম্বুরার পাতা ব্যবহার করে থাকে। জাম্বুরা ফুল ব্যবহৃত হয় তেল ও সুগন্ধি পারফিউম ও এসেন্সিয়াল অয়েল তৈরি।
বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলেই কমবেশি জাম্বুরা উৎপন্ন হয়, তবে উৎপাদন বেশি হয় তিন পার্বত্য জেলায় এবং উত্তরবঙ্গে। দেশে পাহাড়ি এলাকার জাম্বুরার চাহিদা বেশি। ফাল্গুন (ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ)মাসে জাম্বুরার মুকুল বা ফুল আসে আর আশ্বিন থেকে পৌষ(জুলাই-সেপ্টেম্বর)মাস পর্যন্ত ফল থাকে। এই ফলের ভরা মৌসুম হচ্ছে আশ্বিন ও কার্তিক মাসে মাঝামাঝি সময়। ফলন ভাল হলে গাছ প্রতি ৩০০-৫০০ জাম্বুরা হয়। বেশির ভাগ জাম্বুরা গাছই বসতবাড়ির এবং স্কুল-কলেজের আশপাশের পতিত জায়গায় লাগানো হয়।
বীজ থেকে চারা হয় তবে বিভিন্ন কলমের মাধ্যমে চারা তৈরি করে বংশবিস্তার বেশি করা হয়। সাধারণত তিন-চার বছরেই গাছে ফুল আসে। জাম্বুরা গাছ সুদৃশ্য বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ। জাম্বুরা গাছ সাধারণত ৬-৮ মিটার লম্বা হয়ে থাকে, শাখা-প্রশাখাবিশিষ্ট এবং ঝোপলো, পাতা গাঢ় সবুজ ও ডিম্বাকৃতি।
No comments:
Post a Comment